রোদ হাসে। হাসতে হাসতে প্রকট হয়৷ কানের গোড়ায় ঘাম জমলে আকাশের দিকে তাকাই বারবার৷ এই ছন্নছাড়া কালো মেঘ, দু একটা পাখি, ঝলসানো ঘাস ইত্যাদি উপেক্ষা করে সেমিজের ভেতর থেকে বের করে আনি একমুঠো মেয়েবেলা। যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন"- এর পাশে বেড়ে উঠেছিল হরিতকী গাছ৷ দু একটা স্বপ্ন, যেখানে আজও জানু পেতে বসে আছে আমাদের পূর্বপুরুষের আগুন৷
আমি কোন জাতিস্মর নই। এ জন্মেই চিনে নিয়েছি ব্যক্তিগত রোদ, বৃক্ষ, নদী, পাখি, আর অক্সিজেন। বেঁচে থাকার উপায়গুলোতে প্রত্যেকেই ফুটিয়েছে নীলপদ্ম৷ প্রতিবার নতুন বছর এসে চলতি পথকে পুরনো করে দিলে আরামকেদারায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে গোপন দহন৷ গম রঙের আলো এসে পালিশ করে দেয় যাবতীয় সঙ্গম।
এই সব দেখে খাতায় লিখে রাখি যারা জ্বলে তাদের রঙ রোদ। যারা পোড়ে তাদের রঙ পৃথিবী। যারা হাসে তাদের রঙ নববর্ষ৷ যে গাছগুলো ফল দেয় তার কাছে মানত করি একটা তিনশ পঁয়ষট্টি আসুক মুক্তির৷ খোলা পিঠের ওপর খোদাই করা কবিতার শরীরে জন্ম নিক এক দুই তিন- অসংখ্য ছায়াশব্দ৷
তারপর কোন একদিন রোদের বাড়ি গিয়ে বলব লালনের একতারায় সুর উঠেছে৷ সে এক আদিবাসী গ্রাম৷ যেখানে প্রতিটি মেয়ের বুকের ভেতর লুকোনো আছে শতাব্দীর তীব্র প্রপাত। যেখানে সমস্ত আগুন উড়িয়ে দিয়ে চোরাস্রোতে মিশে যাচ্ছে প্রিয় জয়ন্তী৷ আরামকেদারায় তখনও শুয়ে শুয়ে রেডিও শুনবে দুপুরের রোদ৷ পায়ে জুতো মাথায় টুপি, হাতলের পাশে রাখা থাকবে বিদেশি ক্যাকটাস৷ আমি বরং ভলিউম বাড়িয়ে চালিয়ে দিই প্রিয়জনেদের উচ্চারিত গায়ত্রি মন্ত্র৷
নীলম সামন্ত
থানে ওয়েস্ট, মহারাষ্ট্র, ৪০০৬১৫
No comments:
Post a Comment