একমাসের মধ্যেই সমস্ত পুঁজি শেষ হয়ে যাবার পরেই বাদল কেমন যেন পাগল পাগল হয়ে গেছিল। এরপর যখন শুনল যে লক ডাউন আরও বেশ কয়েক মাস চলবে তখন থেকেই কিছু একটা করে সংসারের খরচ ওঠাবার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছিল বাদল। এই লক ডাউনের মধ্যেও রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ওরই সম গোত্রীয় বন্ধুদের সাথে দেখা করে ওরা কে কীভাবে এই সমস্যা থেকে বেড় হবার কথা ভাবছে সেইসব কথা বার্তা বুদ্ধি পরামর্শ নিয়ে ভাবতে থাকে লোকটা। এরই মধ্যে একদিন বাড়ি ফেরার পথে পুলিশের লাঠির ঘা ও পরে ওঁর পিঠে। কোনমতে দৌড়ে বাড়িতে এসেই প্রথম বাদল ওর স্ত্রী পাপিয়াকে জানায় ওর সিদ্ধান্তটা।
বাজারের রাস্তায় প্রধান গেটের একটু আগেই ওর এক বন্ধু আলুর ব্যাবসা খুলে বসেছে। ছেলেটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির এজেন্ট, ভালই রোজগার হচ্ছিল। কিন্তু এই করোনার বাজারে আর কারও কাছেই পলিসি কিনবার কথা বলবার সাহস পাচ্ছেনা বেচারা। অবশেষে আলুর ব্যবাসা শুরু। ওর পলিথিনের ছাউনি দেয়া আর ইট দিয়ে চারিদিকে একটা লক্ষণ রেখা টেনে দেয়া দোকানের পাশেই একটা জায়গা এখনো খালি আছে। বাদল যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওখানে বসে পরে আর একটা ইটের গণ্ডি টেনে ওর সব্জির ব্যবসা শুরু করে দেয়। আর বাদল তাই ঠিক অরেছে ও আলুর দোকানের পাশে পেঁয়াজ রসুনের দোকান চালু করবে।
যেমন কথা তেমন কাজ। বন্ধুর পরামর্শ মত হোল সেল মার্কেটে গিয়ে কমদামে পেঁয়াজ রসুন কিনে রাস্তার পাশেই বসে পরে বাদল। ভাগ্যিস ও সময় মত বসে পড়েছিল, নইলে হয়ত জায়গাটা হাতছাড়া হয়ে যেত। কয়েক দিনের মধ্যেই আরও অনেক দোকান গজিয়ে উঠেছে ঐ রাস্তার পাশে। অনেকেই এখন আর বাজারের ভিতর না গিয়ে, বাইরে থেকেই আলু পেঁয়াজ ইত্যাদি কিনে ওদের এই সৎ সাহসের জন্য বাহবা দিচ্ছে। আর চেনা জানা মানুষ যারা তাদের তো কথাই নেই। দেখতে দেখতে মাত্র দুই মাসের মধ্যেই বাদলের বেশ ভালো রোজগার হতে থাকে। যদিও মাঝে একদিন বাজারের ভিতরের দোকানদাররা এসে খুব শাসিয়ে গেছে, কিন্তু লোকাল মানুষরা এদের পাশে এসে দাঁড়ানোয় ওরা আর কিছু করার সাহস পায়নি।
কিন্তু এখন নতুন সমস্যা হয়েছে পাপিয়ার। বাদল আজকাল প্রায়ই সকালে শুধু এক কাপ চা আর দুটো বিস্কুট খেয়েই দৌড়ায় বাজারে সাইকেলে ওর সবচেয়ে বড় ব্যাগ দুটোয় পাইকারিতে কেনা পেঁয়াজ রসুনের সম্ভার নিয়ে। পাপিয়ার কোন কথাই তখন তার কানে ঢোকে না। বাদলের বাবা, ছেলে এবং ওর দশ বছরের মেয়ে সবাই তখন ওর পর হয়ে যায়। সবার আগে বাজারের রাস্তায় গিয়ে না বসতে পারলে ওর শান্তি হয়না। পাপিয়া শেষে বাধ্য হয়েই ওর টিফিন নিজে গিয়ে দিয়ে আসতে শুরু করেছে। পাপিয়াকে ওর টিফিন নিয়ে আসতে দেখে বাদল খুশির বদলে উল্টে রেগে যায়। গজ গজ করতে করতে সেই টিফিন নামায় গলা দিয়ে, কিন্তু রাগ নামে না। বাড়িতে এসে কয়েকদিন চেঁচামেচি করেও যখন কোন লাভ হয়নি, তখন বাধ্য হয়ে বকাবকি বন্ধ করে দিয়েছে বাদল।
তিন মাস বাদে যখন শপিং মল তখনো খোলার কোন নাম নেই, বাদল হিসাব করে দেখল ওর এই পেঁয়াজ রসুনের ব্যাবসা বেশ জমে উঠেছে। এখন মাস গেলে ওর কাপড়ের দোকানে যেই মায়না ছিল তার চেয়েও বেশি আয় হচ্ছে। আর বাঙ্গালীরা তো অতো লক ডাউনের পরোয়া করেনা, রোজ সকাল হলেই ব্যাগ হাতে সব চলল বাজারে। বাদলের দিদি জামাইবাবু দিল্লিতে থাকে। বাদল ওখানে সপরিবারে বেড়াতে গিয়ে দেখেছে ওরা সারা সপ্তাহের শাক সবজি মাছ মাংস সব এক বারেই কিনে রাখে, কলকাতার লোকদের মত রোজ বাজার করবার কোন বদ অভ্যাস নেই বাইরের বাঙ্গালীদের। প্রথম প্রথম বাদলেরও লক ডাউনের মধ্যেও সবাই কেন এতো বের হয় বাজার করতে ভেবে রাগ হত, কিন্তু এখন বাদল ভাবে অন্য কথা। এরা বের না হলে ওর বিক্রি হবে কী করে ? কলকাতার বাঙ্গালীরা যেন রোজ এভাবে বাজারে আসে আর ওর সেল বাড়তে থাকে।
বাদল অনেক ভেবে ঠিক করল এই রাস্তার ধারেই ওকে আরও একটা দোকান খুলতে হবে। ওর ছেলে সামনের মাসেই ফাইনাল পরীক্ষা অন লাইনে দিয়ে চাকরির চেষ্টা করবে ঠিক করেছিল। কিন্তু এখন এই বাজারে ও নিশ্চয়ই কোথাও কোন চাকরি পাবে না। তার চেয়ে বরং এরকম একটা দোকান দিয়ে বসলে একটা পাকা পাকি রোজগারের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। রাতে খেতে খেতে পাপিয়ার সামনেই বিক্রমকে বলল কথাটা। কিন্তু বিক্রম বাবার প্রস্তাবে কোন রকম উৎসাহ না দেখিয়ে বলে উঠল,’ বাবা, তুমি না একটা অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বল। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করে শেষে রাস্তার পাশে বসব সব্জি বেচতে ! আমার কী কোন প্রেস্টিজ নেই ?’
বাদল অবাক হয়ে একবার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলল,’ ও তোর বাবা রাস্তার পাশে বসে পেঁয়াজ বিক্রি করলে তোর প্রেস্টিজ যায়না, আর তুই নিজে রাস্তার পাশে দোকান দিলে তোর প্রেস্টিজ চলে যাবে ? বাঃ, বেশ বেশ।‘ কথাটা বলে বাদল চুপ করে বাকি খাবারটা মুখে পুরে ঢক ঢক করে জল খেয়ে উঠে দাঁড়াল আর গম্ভীর স্বরে বলল, ‘তাহলে এক কাজ কর, তুই তো এখন লায়েক হয়েছিস, সামনের মাস থেকে তোর খাওয়া খরচ বাবদ সংসারে পাঁচ হাজার টাকা দিবি তোর মায়ের হাতে। তবে বুঝব তোর সত্যিই প্রেস্টিজ জ্ঞান আছে।‘
বাদল আর কোন কথা না বাড়িয়ে চলে যায় মুখ ধুতে আর বিক্রম হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ওঁর গমন পথের দিকে। আর তারপরেই সামনে বসা মাকে বলে ওঠে,’ এটা কোন কথা হল মা ? আমি কোত্থেকে পাঁচ হাজার টাকা এনে দেব তুমিই বল। বাবা এটা কী বলে গেল ? জানেনা আমি একজন বেকার, এতো টাকা আমি পাব কোত্থেকে ?’
এবার পাপিয়া ঝাঁজালো কিন্তু চাপা গলায় বলে ওঠে,’ কেন, তুমি বেকার হয়ে যখন সিগারেটের পয়সা জোগাড় করতে পার, বন্ধুদের সাথে সিনেমা যেতে পার তখন বাপের হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিতে পারবে না ? জাননা তোমার বাবার মলের চাকরিটা গেছে, সংসারটা কী ভাবে চলছে দেখতে পাচ্ছ না ? একটা লোক মুখে রক্ত তুলে সেই পাইকারি বাজার থেকে মাল নিয়ে এসে রাস্তার ধারে বসে বিক্রি করে সংসারের ঘানি টেনে চলেছে আর বাবু প্রেস্টিজ ফোটাচ্ছেন। যা, যেখান থেকে পারবি মাসে মাসে পাঁচ হাজার টাকা এনে দিবি আমাকে। এখন বোঝ নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব পড়লে কেমন লাগে। ওঠ, খাওয়া হয়ে গেছে , ওঠ এবার। ‘
বিক্রম মুখ নিচু করে উঠে পড়ল। মা’র এই কথার কোন উত্তর নেই ওর কাছে। সত্যিই তো, বাবা নিজে ওদের মুখে দুটো খাবার জোটাবার জন্য কী পরিশ্রমটাই না করছে। সেখানে ও নিজে তো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এই বাজারে ও যে একটা চাকরী পাবেই তার কোন গ্যারান্টি আছে ? ফাইনালটা শেষ হলে ওর হাতে অঢেল সময় থাকবে। ওকে একটা কিছু করতেই হবে তখন। কিন্তু কী করবে বিক্রম। ও রাস্তার পাশে বসে তরি তরকারি বেচছে জানতে পারলে ওর ফিয়াসে দিয়া কী ভাববে ? ইস, দিয়ার মত একটা বড়লোকের মেয়ে তখন তো ওকে একটা যা তা ফালতু ছেলে ভাববে। না না , সেটা হয়না। দিয়াকে ও কিছুতেই হারাতে পারবে না।
কয়েক দিন বাদেই বিক্রমের ফাইনাল শুরু হবার কথা। একদিকে যেমন বিক্রম পড়াশুনায় উঠে পরে লেগে গেল, আরেক দিকে বাদল এই মুহূর্তে ছেলেকে আর ডিস্টার্ব করতে চাইল না। পাপিয়াকেও বলে দিল যেন ছেলেকে আর এই টাকা দেবার ব্যাপারে কোন কথা না বলে। বিক্রম মনে মনে ভাবতে থাকে তার চেয়ে বরং ওর দোকানের আসে পাশেই কোন দোকান , মানে পলিথিনের শেড দেওয়া ছাউনি, খালি হচ্ছে কিনা নজর রাখতে হবে। যদি ছেলের মতিগতি পাল্টায় তাহলে ওকে তো একটা এরকম শেডের বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। তার উপর বাদল শুনেছে এই লক ডাউন উঠে গেলে রেলের ওপারে নাকি আরকটা বাজার তৈরি করবে ওদের মিউনিসিপালিটি, আর সেখানে এখানকার সবাইকে একটা করে দোকান দেবার প্ল্যান আছে সরকারের।
একমাস বাদে পরীক্ষা হয়ে যাবার পর একদিন সন্ধ্যায় বিক্রম বড় দীঘির পাশের বাগানে বসে ওর ফিয়াসে দিয়াকে সব খুলে বলছিল ওর বাবার প্রস্তাবের কথা। সাথে এটাও বলল যে রাস্তার পাশে বসে সবজি বেচবার কোন ইচ্ছাই ওর নেই। ও একটা ভাল চাকরি জোগাড় করে জীবনে অনেক উন্নতি করতে চায়। কিন্তু এই কথা শুনে দিয়ার মুখটা কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেল। জিজ্ঞাসা করল,’ কেন বিক্রম, তোমার বাবা তো আর কোন অন্যায় কাজ করতে বলেন নি। আজ উনি যদি অবস্থার পাঁকে পরে রাস্তায় বসে পেঁয়াজ বেচতে পারেন তাহলে তুমি সেই একই কাজে ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালে কেন তোমার আপত্তি বোলো তো ? আমি ঠিক বুঝতে পাড়লাম না।‘
বিক্রম দিয়ার কথার কোন মাথা মুণ্ডু বুঝতে না পেরে অবাক হয়ে বলল,’ তার মানে ? তুমি বলছ আমি বাবার মত ঐ রাস্তার পাশে বসে সবজি বিক্রি করি ? তোমার মাথা খারাপ হয়েছে দিয়া ? আমি গিয়ে বসবো ঐ রাস্তার ধারে ? ইম্পসিবিল, সেটা হয়না দিয়া। আমি বিভিন্ন জায়গায় আমার সি ভি পাঠিয়েছি, একটা না একটা চাকরি ঠিক পেয়ে যাব। তুমি কোন চিন্তা করোনা সোনা। একটু ভরসা রাখ আমার উপর। আমাকে একটু সময় দাও তুমি।‘
দিয়া একটু হেসে বলে উঠল,’তাহলে তোমার মার হাতে এই মাস থেকে পাঁচ হাজার টাকা দেবে কোত্থেকে শুনি ? যতক্ষন না চাকরি পাচ্ছ ততক্ষন ঐ টাকাটা আসবে কোথা থেকে মশাই ? হ্যাঁ, তুমি চাইলে আমি তোমাকে ধার দিতে পারি বিক্রম। আমার এটুকু ভরসা আছে তোমার উপর।‘
বিক্রম নিজেই বাবা ওকে মাসে মাসে পাঁচ হাজার টাকা দিতে বলেছে সেই কথাটা দিয়াকে বলে দিয়ে এখন নিজেই বেকায়দায় পড়ে গেল। রিয়া এই শেষ কথাটা যে ওকে খোঁচা মারবার জন্য বলেছে সেটা বুঝতে পেরে মনে মনে ভীষণ আঘাত পেল এবং ক্ষুব্ধ হল ঠিকই, কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারল না। ওর মনের ভিতর দিয়া ওকে ছেড়ে যাবার যেই ভয়টা ছিল এতদিন সেটার জন্য এখনো ও নিশ্চিত হতে পারল না যে দিয়া ওকে রাস্তায় বসে সবজি বেচতে বলে নিজে আবার অন্য কোন ভালো পাত্রের সাথে লটকে যাবে না তো ?
দিয়া ওর কথার কোন জবাব না পেয়ে বিক্রমকে আরেকটু খোঁচা দেবার জন্য বলল,’ আর তুমি যদি খুব ভাল একটা চাকরি পেয়েও যাও, তোমার বাবা তো আর তার দোকান ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে থাকবেন না। সেক্ষেত্রে তোমার পরিচয়টা তো বদলাবে না বিক্রম। তোমার বাবা সেই রাস্তার পাশের দোকানদারই থেকে যাবেন, তাই না , বল ?’
বিক্রমের বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে ওঠে। সত্যি তো, এই কথাটা তো বিক্রম ভাবেনি কোনদিন। দিয়ার বাবা মা যখন শুনবেন ওঁদের বড় মেয়ে একজন পেঁয়াজ রসুন বিক্রেতার ছেলেকে বিয়ে করতে চায়, তখন ওর বিয়ে তো এমনিতেই ভেঙ্গে যাবে। বিক্রম দিয়ার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। একদিকে বাবার নির্দেশ প্রতি মাসে বাড়িতে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে, আরেকদিকে দিয়াকে হারাবার ভয়। কিন্তু দিয়া নিজে তবে কেন ওকে বাবার মত দোকান খুলে বসতে বলছে ? দিয়া আধুনিক শিক্ষিতা মেয়ে। ও কি এটা মন থেকে বলছে নাকি বিক্রমকে পরীক্ষা করবার জন্য বলছে। বিক্রম আর কোন কথা না বাড়িয়ে চুপ করে গেল।
বাড়িতে ফিরেই বিক্রমের মাথায় বাজ পড়ল। ওর বাবার দুদিন যাবত জ্বর ও সর্দী কাশী হচ্ছিল। কাল করোনার জন্য রক্ত ও থুতু পরীক্ষা করতে দিয়ে এসছিল। আজ নাকি রিপোর্ট এসেছে, বাবার করোনা পসিটিভ এসেছে। এদিকে কাল নববর্ষ, বাবা বিক্রির জন্য অনেক মাল তুলে রেখেছেন। বাবাকে হাসপাতালে রিপোর্ট দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নিয়েছে। কিছুক্ষন আগেই মার কাছে হাসপাতাল থেকে ফোন এসেছিল। কাল সকালে ওদেরও নাকি সব টেস্ট করবার জন্য হাসপাতালের লোক আসবে। যতক্ষণ না ওদের রিপোর্ট পাওয়া যাবে ততক্ষন ওদের বাড়িতেই থাকতে হবে, কোথাও যাওয়া বারণ। নেগেটিভ হলে তবেই বের হতে পারবে।
ঠাকুরদা ওর ঘরে বিছানায় শুয়ে এই খবর পাবার পর থেকেই সমানে কান্না কাটি করে চলেছেন। ভগবানকে ডেকে বলছেন,’ আমাকে তুমি তুলে নাও ঠাকুর, আমার ছেলেটাকে ফিরিয়ে আনো ঠাকুর। ওর কিছু হলে আমাদের সংসারটা ভেসে যাবে ঠাকুর। আমাকে তুমি তুলে নাও ঠাকুর।‘
বিক্রম বুঝতে পারে ঠাকুরদা বাবাকে কতটা ভালোবাসেন। ঠাকুরদার কান্না শুনে ওর চোখে জল চলে এল। ওর বাবাও তার মানে ওকে ভীষণ ভালোবাসেন। কই সেদিনের পর থেকে আজ পর্যন্ত আর একবারও বাবা , এমন কি মাও কোনদিন, ওকে মাসে মাসে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে সেটা বলেন নি আর। এদিকে বাপের হোটেলে থেকে বিক্রম প্রেম করে বেড়াচ্ছে, সংসারের কথা একবারও ভাবছেনা। বিক্রম গিয়ে ঢুকল ঠাকুরদার ঘরে। খাটের এক পাশ দিয়ে বসে মাথায় হাত রাখল বিক্রম। পাপিয়া এসে দাঁড়ালো দরজায়। শুনতে পেল বিক্রম ওর দাদুকে বলছে,’ দাদু, তুমি কাঁদছ কেন ? দেখো, বাবা ঠিক ভাল হয়ে বাড়ি চলে আসবে। আর আমি তো আছি দাদু। কাল থেকে আমি গিয়ে বসব বাবার দোকানে। তুমি একদম চিন্তা করোনা দাদু। সব ঠিক হয়ে যাবে।‘
বিক্রমের দাদু একটা হাত তুলে দিলেন নাতির মাথায়। ফিস ফিস করে বললেন,’আমি তোমার কাছ থেকে এটাই আশা করেছিলাম দাদুভাই। আশীর্বাদ করছি তোমাকে। অনেক বড় হবে তুমি।‘ কথাটা বলে উনি মনে মনে ভাবলেন, ‘একেই বলে কোভিডের সাইড এফেক্ট।‘
-----------শেষ-----------
A -208, Nishant Pride Apartment.
Kamadhenu Nagar. B Narayanapura.
Bangalore - 560016. Karnataka.
No comments:
Post a Comment