Friday, April 15, 2022

সূচিপত্র ও প্রচ্ছদ নববর্ষ সংখ্যা

সকল পাঠকবর্গ ও লেখকবর্গকে বাংলা নববর্ষের প্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এভাবেই পাশে থাকবেন।
                           - স্বরূপিনী পত্রিকা পরিবার 

                        সূচিপত্র
             (তৃতীয় অনলাইন সংখ্যা) 

প্রবন্ধ 


মুক্তগদ্য 


ছড়া


কবিতা 



গল্প 


কবিতা ২


আঁকা ছবি 


মুভি রিভিউ 


কী খাবেন?  






গ্রীষ্মের খাদ্যাভ্যাস



ভারতীয় উপমহাদেশের এক এক প্রান্তে গরমের ধরনটা এক একরকম। পূর্বদিকে যান, আর্দ্রতার চাপে হাঁসফাঁস করবেন, রাত-দিন গলগলিয়ে ঘাম বেরোবে। উত্তর আর উত্তর-পশ্চিমের গরমটা একেবারে শুকনো, খটখটে। দুপুরবেলা শুকনো হাওয়া বয়, গরমের দিনেও ত্বকের সমস্ত আর্দ্রতা শুষে নেয় তা। চড়চড়িয়ে গা-হাত পা, ঠোঁট ফাটে। দক্ষিণের গরম গনগনে তীব্র, অনভ্যস্ত হলে বেশিক্ষণ সহ্য করা মুশকিল। তাই আমাদের দেশে সুপ্রাচীনকাল থেকেই গরমের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য নানা হাতিয়ারে শান দিয়ে রাখার ব্যবস্থাও আছে। আপনি রোজ যা যা খাচ্ছেন, তারই উপর নির্ভর করবে শারীরিক সুস্থতা। তাই প্রাচীনকাল থেকেই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে মেনে চলা হয় বিশেষ খাদ্যতালিকা। জানতে চান, তার আবশ্যক উপাদান কোনগুলি?

ডাবের জল: ডাবের দাম বেশি নয়, কিন্তু তা আপনার শরীরকে শীতল ও আর্দ্র রাখতে দারুণ কার্যকর। এর মধ্যে নুন ও অন্য নানা খনিজ উপাদান থাকে, তা আপনার সামগ্রিক সুস্থতার জন্য খুব দরকারি। ভারতের উপকূল অঞ্চলে প্রচুর ডাব হয়, গরমের দিনে ইচ্ছে করলেই আপনি 2-3টি ডাবও খেতে পারেন। ডাবের জল কিন্তু আপনার ফেস মাস্কের বেস হিসেবেও চমৎকার!

দই: দোকানে পাতা কড়া মিষ্টির লাল দই এক আধদিন চলতে পারে, রোজ খাওয়ার জন্য ভালো কিন্তু ঘরে পাতা সাদা টক দই। দক্ষিণীদের মতো কারিপাতা, আদা-কাঁচালঙ্কাকুচি, সরষে ফোড়ন দেওয়া পাতলা ঘোল বানান বা উত্তর ভারতীয় ঘরানায় মালাই লস্যি বা রায়তা তৈরি করুন, দই ছাড়া আপনার গ্রীষ্মকাল অচল! প্রোটিন ও প্রোবায়োটিকের উৎস হিসেবেও দই আদর্শ, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তা অবশ্যই রাখবেন।

তরমুজ, ফুটি, শসা: তরমুজে লাইকোপিন থাকে, ফুটিতে আছে ক্যারোটিন, শসা অ্যালকালাইন বা ক্ষারীয় হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে রাখে শরীরের পিএইচ ব্যালেন্স। এছাড়া এই তিনটি ফল থেকেই পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ জল। বাদ দেবেন না তাজা আপেল, আঙুর, বেদানা। গরমকালে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর জল বেরিয়ে যায় শরীর থেকে, সেই ঘাটতি পূর্ণ করার জন্য এই ধরনের ফলগুলি আদর্শ।

পুদিনাপাতা: পুদিনাপাতা হজমের পক্ষে সহায়ক, তা শরীরের তাপমাত্রা কমায় এবং আপনাকে চনমনে করে তোলে। পুদিনা আপনার শরবতে যোগ করুন, চাটনি তৈরি করে রাখতে পারেন, রায়তায় দিলেও খেতে দারুণ ভালো লাগে।

লাউ, কুমড়ো, করলা: লাউ আপনি রান্না করে খেতে পারেন, জ্যুসও খাওয়া যায়। তা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। জানেন কি, 100 গ্রাম লাউয়ের 96 শতাংশই জল, আর তা থেকে আপনার শরীর বড়োজোর 12-13 ক্যালোরি পায়! কুমড়ো দিয়ে আপনি ইত্যালিয়ান স্যুপও বানাতে পারেন, ছক্কাও চমৎকার খেতে হয়। করলায় আছে ভিটামিন এ, কে, সি, বি টু বি থ্রি, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি। প্রতিটি সবজিই শরীরকে প্রয়োজনীয় জল জোগাবে, রান্না করতেও খুব বেশি তেল-মশলার প্রয়োজন হয় না। খেতে পারেন পটল, ঝিঙে, স্কোয়াশও।

পেঁয়াজ: শুনতে একটু আশ্চর্য লাগলেও এ কথা ঠিক যে পেঁয়াজ আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং গ্রীষ্মকালের খাদ্যতালিকা থেকে তা বাদ দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। যাঁরা কাঁচা পেঁয়াজের গন্ধ অপছন্দ করেন, তাঁরা আগে থেকেই নুন-লেবুর রস মাখিয়ে রেখে দিন, পেঁয়াজের ঝাঁজ অনেকটাই কমে যাবে। রান্নাতেও ব্যবহার করতে পারেন স্বচ্ছন্দে।


ছবি || তন্দ্রা ব্রহ্মচারী










মুভি রিভিউ || The Kashmir Files || মলয় কোলে



গত ১১মার্চ ২০২২ সালের মুক্তি পেয়েছে "দ্য কাশ্মীর ফাইলস"। ছবির পরিচালক হলেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, দর্শন কুমার, পল্লবী যোশী, চিন্ময় মাণ্ডলেকর, প্রকাশ বেলাওয়াড়ি, পুণীত ইসার।

ছবিটিতে রয়েছে প্রায় তিন দশক আগের ঘটনার প্রকৃত সত্য।ছবির ভিত সরকারি সংগ্রহশালায় বন্দি করে রাখা ‘কাশ্মীর ফাইলস’ নামের বিস্ফোরক নথি। এই নথির উপর ভিত্তি করেই নানা চরিত্র ও ঘটনা তুলে এনে সিনেমার পর্দায় দেখিয়েছেন পরিচালক। ১৯৯০ সালের পয়লা জানুয়ারি সমগ্র কাশ্মীরে (Kashmir) যে পাঁচ হাজার হিন্দু পণ্ডিত ব্রাহ্মণদের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল – সেই ‘আজাদি’কামী জেহাদিদের সহিংস স্লোগান ছিল ‘রালিব’, ‘গালিব’ ও ‘চালিব’ যার সোজা সাপটা অর্থ – “জেহাদি হও, না হয় মরো, নইলে কাশ্মীর ছাড়ো।” সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা মাত্র দু’হাজার, কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা ৫ থেকে ৬ হাজার।ছবিতে দেখানোও হল অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জেহাদিদের হিংস্র স্লোগান “কাশ্মীর শুধু কাশ্মীরি মুসলমানদের, এখানে থাকতে হলে আজাদিকে সমর্থন করো, নইলে কাশ্মীর হবে হিন্দু পুরুষহীন, শুধু হিন্দু মহিলারা থাকবেন। বাড়ি, ঘর জ্বালিয়ে, পুলিশ সেনাদের পোশাক পরে নাদিমার্গে ২৪ জন কাশ্মীরি পণ্ডিতকে জবাই করেছে তথাকথিত জেহাদিরা। বিবেক অত্যন্ত সাহসের সঙ্গেই ঘটনাগুলোর হিংস্রতা ও ভয়াবহ মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় তুলে ধরেছেন। বিরতির ঠিক আগে গাছে গাছে পণ্ডিতদের মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখার মতো নৃশংস দৃশ্য দেখলে কষ্ট হয়, দুঃখ হয়, বিরক্ত লাগে, রাগ হয়।

কাহিনির কেন্দ্রবিন্দু প্রবীণ পণ্ডিত পুষ্করনাথ (অনুপম খের)। তাঁরই পরিবার, মেয়ে, ছেলে খুন হয়। একমাত্র ছোট নাতি কৃষ্ণ(দর্শন) বেঁচে থাকে। পুষ্করকে আশ্রয় নিতে হয় উদ্বাস্তু ক্যাম্পে। ৩২ বছর পর দাদুর চিতাভস্ম শ্রীনগরের পরিত্যক্ত বাড়িতে পৌঁছতে তার সঙ্গে আসে দাদুর চার বন্ধু, দু’জন পুলিশকর্তা(মিঠুন চক্রবর্তী ও পুণীত ইসার), একজন সাংবাদিক, আর একজন প্রতিবেশী। কৃষ্ণের সঙ্গে এঁদের কথোপকথনের মধ্য দিয়েই অতীত ও বর্তমান উঠে আসে।
বিবেকের চিত্রনাট্য শুধু স্বাধীন কাশ্মীর পাবার হিংস্র আন্দোলন দেখায়নি, দেখিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানবতাবাদী গোষ্ঠী, নরম ও চরমপন্থীদের সুবিধাবাদী কাজকর্মও। সুবিধা ভোগ করার জন্য ‘আজাদি আন্দোলন’ জিইয়ে রাখার বিষয়টিও বাদ যায়নি।একসময় কাশ্মীরে অধিকাংশ সরকারি উচ্চপদে কাজ করেছেন শিক্ষিত হিন্দু পণ্ডিতরা। মুসলমানদের রাগের অন্যতম কারণও তা দেখানো হয়েছে। একটাই অস্বস্তি, অতীতের ঘটনা যেভাবে দেখানো হয়, বর্তমানেও দৃশ্যের অন্তত লোকেশনের তেমন পরিবর্তন ক্যামেরায় উঠে আসে না। ভিজ্যুয়ালের জোর নাটকীয়তায়, ঘটনার তীব্রতায়।

শ্রীনগর থেকে সাংবাদিকের পাঠানো সব খবর প্রকাশ পায় না সরকারি নিয়মের বেড়াজালে। তা স্বীকারও করে নেওয়া হয়। যখন এক বন্ধু বলে ওঠেন, “মিথ্যা খবর প্রচারের চাইতে সত্য খবর লুকোনো আরও বড় অপরাধ।” এখন তো সংবাদপত্র ও টিভির পর্দায় সত্য খবর খুঁজে পাওয়া মুশকিল, মিথ্যার প্রচার শুধু। প্রচার মাধ্যমের এমন অবনতির দিকে সরাসরি আঙ্গুল তোলার জন্য ধন্যবাদ। তবে হ্যাঁ, প্রায় তিন ঘণ্টার এই ছবিকে আড়াই ঘণ্টা পরিধিতে আটকাতে পারলে পরিচালকের বক্তব্য আরও তীব্র ও তীক্ষ্ণ হতে পারত। 

গোটা দেশে এত চর্চিত হয়ে উঠল সিনেমাটি। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীও সংসদীয় বৈঠকে বললেন এই সিনেমাটি সকলের দেখা উচিত।

The Kashmir Files.

পূর্ব বর্ধমান

কবিতা || অবসরে || করবী দাস



আজ আর হারিয়ে যাওয়ার কথা বলবো না
 আজ শুধু মনে রাখার কথা বলবো। 
সময় পেলে মনে ক'রো, 
অবশ্য কাজ বাদ দিয়ে নয়, 
তুমি কাজ করতে করতে কখনো
                            চোখ তোলো না
                             চোখের পাতা ফেলো না —
          তখন আমাকে মনে করো ।
অথবা,
 কোনো হারিয়ে যাওয়া গানের কলি 
ফেলে আসা কবিতার ছন্দ 
         ভালোবাসার গন্ধে —
         মনে ক'রো আমাকে...


আকাশে মেঘ দেখো না, 
সবুজ ঘাসে পা রেখো না, 
তখন, তখন আমাকে মনে করো। 
ফুলের গন্ধে বাতাসের আলতো ছোঁয়ায় 
প্রেমের কানাগলি বেয়ে 
                          মনে করো আমাকে...


অবসরে মনে মনে প্রেমের কবিতা সাজিও, 
অন্ধকার ঘরে সা-রা-রাত
চুপি চুপি মনের কথা আমাকে ব'লো...
ভাবছো হয়তো, 
               আমি শুনতে পাব না, 
মন দিয়ে ব'লো —
তারা আমার অন্তরে সাড়া দিয়ে যাবে...

শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ফাঁকে 
                  যেটুকু সময় থাকে, 
আলোর সাথে আঁধার মেশার আগে 
                    যেটুকু সময় থাকে 
তোমার সব ভাবনার ফাঁকে 
প্রেমের শিশির মাখতে ইচ্ছা হলে 
                     আমাকে মনে ক'রো। 

কখনো যদি ভীষণ উদাস হতে ইচ্ছা করে 
            তাহলে হাত বাড়িয়ে ডেকো আমাকে,
                               তোমার একলা আঙিনায় 
             ভালোবাসার আবেশ নিয়ে ধরা দেব
                                 তোমার হৃদয়ে...



করবী দাস 
চক পীতাম্বর দত্ত, শিবগঞ্জ, বাসন্তী, 
দঃ ২৪ পরগণা।



ছড়া || বাংলা নববর্ষ || দীপঙ্কর বেরা




নতুন বছর নতুন আশা
নতুন দিনের আলো
নতুন এলে বাংলা বছর 
আরও লাগে ভালো।

চৈত্র শেষের এই বৈশাখে
নতুন জামা পেলে
পদ্ম শালুক বাংলা হৃদয়
উড়বে ডানা মেলে।

আসবে ফিরে উদ্যমে বেশ
বাংলা জোয়ার গাঁথা 
নতুন গন্ধে আকাশ বাতাস
তুলবে আবার মাথা।

হাল খাতা আর উদযাপনে
লাগবে বাংলা আশা 
বাঙালি তাই আজও বিশ্বে
ছড়ায় ভালোবাসা।



DIPANKAR BERA
Address - BAGUIPARA ROAD, NARENDRAPUR
KOLKATA-700103 

কবিতা || দুটি কবিতা || অঞ্জলি দে নন্দী



নববর্ষ

প্রতি বছর নববর্ষ যায় ও আসে।
শ্রী গণেশ পূজো হয় বৈশাখ মাসে।
ফুল, ফল ভরা থাকে শাখে শাখে।
রৌদ্র-তাপে ডালে ডালে ফল পাকে।
কামড় দিই তাজা, সুস্বাদু ফলে।
আমি সাঁতরাই দামোদর-জলে।
মোষ, গাভী, কুকুর জলে বসে থাকে।
জল পান করে পায়রা, ঘুঘু, বক, কাকে।
বিশ্বকবির জন্মদিন পালি ২৫শে বৈশাখে।
বিচিত্রানুষ্ঠানে স্মরণ করি তাঁকে।
যেই না আসে নববর্ষ।
মনে আসে হর্ষ।
নববর্ষ মানে উৎকর্ষ।
চির নবত্বের স্পর্শ।



কিছুক্ষণ

মৃতদেহটির মাথাটা মায়ের কোলে আছে।
যুবক ছেলের দেহ প্রাণহীন।
কিছুক্ষণ বসেছো কি সেই সে মায়ের কাছে?
নিয়তি তো চির ত্রাণহীন।
জীবনের জন্য কোথায় তার দয়া, মায়া?
নিষ্ঠুরতা যে তার দানে নাচে।
কাজ তার স্পন্দনহীন করা কায়া।
ছিঃ নিয়তি! তুই কি নিদারুণ বেহায়া!
বল তো ওরে ও তুই নিলাজ!
পুত্রহারা মা এখন কি করে বাঁচে?
এবার বন্ধ কর তোর সেই সে পুরোনো কুকাজ!
অকালে কাড়িস না আর প্রাণ!
নিতে দে নবপ্রাণকে দীর্ঘ জীবনের ঘ্রাণ!
শোন তুই অতি দীর্ঘ জীবনের হৃদ-আওয়াজ!
ওহে বিশ্ব, তুমি কি চেনো সেই সে অসহায় মাকে?
কিছুক্ষণ কি তুমি শান্তি দিতে পারো সেই সে মাকে?
হয়েও জীবন্ত
যে চিতা সম জ্বলন্ত।
আমি দেখি সেই সে মাকে।
আমিও ডাকি 'মা' বলে যাকে।
আমার খুব কাছের সেই সে পুত্রহারা মা, তাই।
আর সেই সে অকাল-মৃতটি - সেতো 
হ্যাঁ, সে যে আমার নিজ-ছোট-ভাই।
যে প্রতি বছর আমার আঙ্গুল থেকে
চন্দনের ভাইফোঁটা পেতো।
যার কপালে আমি দীর্ঘায়ুর চিহ্ন দিতাম এঁকে।
তবুও আজ আর সেতো
আমাদের এই জীবনের জগতে নাই।
শুধু বেদনার স্মৃতি গেল সে রেখে।
ব্যথার আঁধারে অন্তরে শুধুই খুঁজি তাকে;
যে চিরতরে ছেড়ে যায়, তাকে কি আর পাই!
তবুও আমার ভাইয়ের ব্যথাতুর মাকে
প্রাণপণ চেষ্টায় বাঁচাতে চাই।
আর সে এখনই চিরতরে চলে যেতে চায়
তার আদরের ছেলের কাছে।
হায় হায় হায়!!!
মৃত্যু তো শরীরকে শ্বাসহীন করতে নেয় 
কিছুক্ষণ মাত্র।
সত্যই মৃত্যু, তুই এক চির ঘৃণার পাত্র।


পি - ১১৪
পি এক্সটেনশন।
মোহন গার্ডেন
উত্তমনগর
দিল্লী - ১১০০৫৯


কবিতা || দৃষ্টিকোণ || অলভ্য ঘোষ




আমি দেখলাম 6 ছয় ;
উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি দেখলো 9 নয় !
আমার যেটা ৪(চার) ;
আর একজনের 8(Eight) দ্বিগুণ সমাহার!
আমার যখন ভোর হল কারো তখন রাত্রি।
কারো ভাষার "চুল" হল আমার ভাষায় খিস্তি।
কারো গরু পূজনীয় কেউবা দেয় কোরবানি;
আবার শুয়োরের নাম শুনলেই কারো হয় হয়রানি।
টাকা মাটি মাটি টাকা;
কারো আবার টাকা ছাড়া সব ফাঁকা।
কে বোকা আর কে ন্যাকা;বুঝতে গিয়ে খাচ্ছি ধোঁকা!
অম্বল টা এড়াতে হলে পাউরুটি চাই সেঁকা।

বিচিত্র সব দেখে শুনে আমার চক্ষু চড়কগাছ।
বেছে বেছে ঘেঁটে ঘেঁটে খুঁজছি কমন কোনটা আজ।
হাসি,কান্না হীরা পান্না;
জন্ম মৃত্যু পরোয়ানা;
নটা ছেঁদা,
চারিত্রের দোষ একগাদা!
হিংসা,দ্বেষ,ভালবাসা
এই তো এদের অ্যাটাচ বাসা।
মানুষ আমরা জন্তু খাসা; মশার চেয়েও মশকরা;
রক্ত খেলে ঘুষ খেলে জাত যায় না;
চুমু খেলেও নয়
এঁটো খেলেই জাত হারা!

যার যা দেখার সে তাই দেখুক; 
যার যা ভাবার ভাবুক মনে। 
আমিও ঠিক সেও ঠিক; 
তফাৎ শুধু দৃষ্টিকোণে।।


৯৪৫ হরিদেবপুর নেতাজী পল্লী কলকাতা ৭০০০৮২


কবিতা || নববর্ষ || ডাঃ তারক মজুমদার



তুমি অপরপা নারী
নব বর্ষ বৈশাখী
তোমার আগমনে কেন
জলে ভরে আঁখি ?

পবিত্রতা বজায় থাকুক
প্রতি হৃদমন্দিরে
নব আশা উদ্দীপনা এনো
প্রতি ঘরে ঘরে । 

বিশ্বাসঘাতকতা দুরে যাক
হৃদয় কালিমা ঘুচে
নতুন তারিখ স্থান পাক 
পুরনো তারিখ মুছে ।


ডাঃ তারক মজুমদার। সম্পাদক--সাহিত্য দর্পণ। 
 ২ দুর্গা নগর। কাঁকিনাড়। পোঃ--মাদরাল।
জেঃ--উঃ২৪ পরগনা। ৭৪৩১২৬। পঃ বঃ । ভারত।

কবিতা || দোল পূর্ণিমা || প্রবোধ চন্দ্র দাস



সবুর করো পলাশ তুমি
     একটু বাঁধো মন,
তেপান্তরের কঠিন পথে
  করবো রঙের মন্থন।

  পথটা যে অনেক দূর্গম
   মাঝেতে অনেক কাঁটা,
কেমন করে পৌঁছাবো বলো
   নদীতেও চলছে ভাঁটা।

 কোনো মতে এসে দেখি, আহা !
   যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি,
   হৃদয় আঙিনা ভরে উঠলো
আনন্দেতে কবিতা লেখেন কবি।

    ঋতুরাজ বসন্ত এলো
   সুন্দরী দোল পূর্ণিমায়,
 একরাশ খুশির আবেশ
জ্যোৎস্নামাখা আঙিনায়।

     দোলের দিনে বন্ধু আমার
      পাঠিয়ো রঙের আলো,
    নিকেতন তো অনেক দূরে
কি করে বাসবো তোমায় ভালো ॥ 


প্রবোধ চন্দ্র দাস,
৩২, ড: বীরেশ গুহ স্ট্রীট, দ্বিতীয় তল,
পো. অ - সার্কাস এভিনিউ,
কোলকাতা- ৭০০০১৭


কবিতা || কথা বাহার || হামিদুল ইসলাম




ভাঙা বুকে তখনো অজানা বিষাদ 
আমরা কালের যাত্রী। সাজিয়ে রাখছি তরী পেরিয়ে যাচ্ছি শূন‍্য প্রান্তর

ওপারে ঝোড়ো হাওয়া, দাবদাহে ঘাস ফড়িং 
শিরীষ পাতায় শনশন 
আমাদের হাতে চেনা চেনা নববর্ষ। চেনা চেনা উৎসব

সান্ধ‍্য উঠোন 
কথাঘরে জোনাক রাত। পুড়ে যায় হৃদয়। পুড়ে যায় হৃদয় জঙ্গম

দাওয়ায় উন্মত্ত নাচ
ছাতিম গাছে দুপুর। সারাদিন ধূধূ । পাখিদের খুশির আকাশ

নববর্ষের পুষ্পবৃষ্টি  
ভিজে যায় অতীত। ভিজে যায় শৈশব 
বিবর্ণ পাঠশালায় কৈশোর বেড়ে ওঠে বিনম্র মায়ায়

রাতের সরাইখানায় হাবুডুবু কবিগান। ডুবে যায় কথা বাহার। 



গ্রাঃ+পোঃ=কুমারগঞ্জ। জেঃ=দক্ষিণ দিনাজপুর


কবিতা || জবানবন্দি || অজিত কুমার জানা




মেঘের মুখ দেখে, 
তোমার কবিতা লিখেছিলাম। 
মাটি এতো নরম হবে,ভাবিনি, 
গদ্যের ভিতরে পদ্য থাকে জানি,
তার রস আস্বাদন, অনুভূতির দর্শন।

সংখ্যা নীরস হলেও-
কখনো কখনো অমৃতভাণ্ড খুলে।
রোজ দুপুরে শুকনো তালপাতার-
ধড়াস ধড়াস শব্দ, 
আমাকে দিয়ে লিখে নেয়,
তোমার ইস্তাহারের নীচে-
আমার ছোট্ট নদীর জবানবন্দি। 


গ্রাম +পোষ্ট-কোটরা, থানা-শ্যামপুর, 
জেলা-হাওড়া, পিন-৭১১৩০১,
পশ্চিমবঙ্গ। 


কবিতা || নতুন বছর || গোপা ঘোষ




নতুন বছর তোমায় সুস্বাগতম,
নিয়ে এসো সেই উজ্জ্বল দিন,
সাদা কালো জীবনের দিনগুলো
যেন হয়ে ওঠে রঙিন।
স্বপ্নেরা যেন পাখা মেলে ওড়ে,
ইচ্ছেরা পায়ে সার্থক ভাষা,
অনাদরে থাকা জীবন গুলো
যেন পায় ভালোবাসা।
নতুন বছরে শান্তি আসুক পরানে
ঝলমলে রোদ উছলে পড়ুক,
সব বেসুরো গানের সুর বদলিয়ে
নতুন গানের ছন্দ করুক।
নতুন বছর এসো নতুন সাজে
সব কালিমা ঘুচিয়ে
সবুজ প্রাণের ইঙ্গিত নিয়ে
শস্য শ্যামলের ঢেউ খেলিয়ে।




কবিতা || মনে পড়ে যায় || মাসিদুর রহমান




কেন যে মনে পড়ে যায় 
যা হারিয়ে ফেলেছি বহুদিন আগে
কেন মন স্মৃতিকাতর হয় বুঝিতে পারিনা
হৃদয়ের মাঝে তাহা জাগে।

 আজও কেন খুঁজে ফিরে আমার মন
সেই স্মৃতির পাতায় বিষন্নতা 
অতিতের ফেলে আসা দূরন্ত প্রহরগুলো 
আজ যেনো বৃষ্টিহীন মৌনতা। 

আজও কেন ক্লান্ত জীবন
মনে করিয়ে দেয় অতিতের কথা 
তোমাকে হারানো আবেগ ভরা স্মৃতি অজস্র যণ্ত্রনা ভরা ব্যাথা।

কেন খুঁজেফিরে মন অলস জীবন
তোমার মায়া ভরা মুখ
তোমাকে হারিয়ে বুঝিতে পেরেছি
তুমি ছিলে মোর সুখ ।

কেন মনে পড়ে তাকে নিয়ে কাটানো সময় 
অভিমান আড়াআড়ি 
আমার গলা জড়িয়ে ধরে
মৃদু গলায় বলত যাবেনাত আমাকে ছাড়ি।

 আজও মনে পড়ে অবশেষে এসে 
তোমাকে হারানো দিনের কথা 
ভেবে হায় হায় দিশেহারা আজ
হারিয়ে এসেছি হেথা ।



কবিতা || ইন্দ্রক্ষণ || প্রতীক মিত্র




অমুক দা’র খোঁচা দিয়ে কথা বলা কমেনা বস্তুত।
মানুষের এত ভীড়ের কি আছে?
এত ছুটছে কোথায় তারা?
না হয় কেনাকাটা করুক ওরা পাছে
ভুলে যদি যায় নববর্ষ আগত।
ঠিক কোন দিনটা পালনীয় মনে আছে কার?
সংস্কৃতিতে এখন বদল যে লাগবে সেটা কোন জিনিসটার...?
বরং বাজারের অনুষঙ্গ দিয়েই না হয় খুঁজে নিক উচ্চারণ,
টান; ঝালমুড়ি সময়ে উজান, লক্ষ্য সেই ইন্দ্রক্ষণ।



কোন্নগর-712235, পশ্চিমবঙ্গ


কবিতা || অনাথ || সুশান্ত সেন




খোলা আছে কবিতার খাতা
লেখা জাগে মনের গোপনে
ছায়া ছায়া নয় প্রস্ফুটিত
মন, সে কি তোমার শাসনে !
রাত্রি জাগে নক্ষত্র ও জাগে
নিয়ে আসে সমবেদনাকে
অমানিশা বিষাদে মলিন
ঘর্মাক্ত হয়েছে বৈশাখে ।
খোলা থাকে কবিতার খাতা
ভাবনারা হয় অন্তর্হিত
অক্ষম সে ,তবু ও কেন রে
বারবার হয় সে তাড়িত !



৩২বি, শরৎ বসু রোড
কলিকাতা ৭০০০২০


কবিতা || জোনাকির প্রেম || মনীষা সিনহা বাবু




আজকে কথা ছিল 
এক চাঁদের তলায় এক সামিয়ানার।
ভিড়ের শহরের ফাঁকা মাঠের আঙিনায়
কাটাবে তুমি আর তোমার প্রিয়তমা।
'মিলন হবে কতো দিনে'.......
ভেসে আসে চিরকালীন বিরহি সুর..
নিয়মের পাঁচালি মেনে সেই বিচ্ছেদ,
তবুও আমার শরীর জুড়ে তোমার গন্ধ
শীতের লেপের চেয়েও একটা উষ্ণ আলিঙ্গন 
আমায় রেখেছে ঘিরে।
মেহগনির পাতায় আগুন লাগানো শিহরণ
বয়ে চলেছে শিরায় শিরায়।
ঠোঁটে তোমার পুরু সিগারেটের গন্ধ
লিপস্টিক আলুথালু স্থান হারা।
রাতের অন্ধকার আজ বেশ আলো আলো
চোখের কালোয় শুধু তুমি।
আজ স্বপ্নে এসো না
এ চোখে অনেক ঘুম বাকি।
এসব মেকি জোনাকির প্রেম
বলবে লোকে,
দিনের আলোয় যায়না দেখা,
আমি উত্তর দেব না।
হেসে কোনো আলোর পথে হাঁটবো
তোমার হাত ধরে,
যেখানে সোনাঝুরির দেশে প্রেম বিলি হয়।
ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবো 
পিহু কাহা পাখির ডাকে।
আবার ফিরবো 
রাতের শহরে জোনাকির প্রেম ভালোবেসে।।



নাম-মনীষা সিনহা বাবু
Dist-bankura
Po+ps-simlapal


কবিতা || খুশির জোয়ারে || অভিষেক মণ্ডল




দেওয়ালে ঝোলানো দিনলিপিটার
             আয়ু শেষের পথে,
শুরু হতে চলেছে একটা নতুন বছর
      আবার নতুন করে পথচলা।

পয়লা বৈশাখের প্রভাতী সূর্য
   ধরনীতে আনুক আশীর্বাদ,
থামুক যুদ্ধ কাটুক অতিমারী 
  আর যত আছে অভিশাপ।

ঐ শোনো মন্দিরে মন্দিরে 
 বেজে উঠেছে মঙ্গল শঙ্খ,
জাগো জাগো সে শুভক্ষণ
         এসেছে দুয়ারে।

সবাই হাতে হাত রেখে 
মেতে উঠি আজি আনন্দে,
নববর্ষের মাহেন্দ্রক্ষণে ভরুক
    প্রাণ খুশির জোয়ারে।


গ্রাম+পোস্ট - বড়গাছিয়া।
            থানা - জগৎবল্লভপুর।
             জেলা - হাওড়া।



কবিতা || নব বৈশাখ || অনন্যা দাস



বসন্ত ডেকে কয় 
        কোকিলের সুরে,
 বৈশাখের আগমন
         ওই দেখো দুরে।
ধুলো বালি স্মৃতি কনা
            সবি ধুয়ে যাক,
নবীনের আলো মেখে
             আসে বৈশাখ।
উৎসবের ডালি নিয়ে 
          নব বৈশাখ শুরু,
তারি আহ্বানে গানে গানে
    করেছিলেন কবি গুরু‌।
রঙে রঙে ভরে ওঠে
             বাঙালির মন,
পুরাতন ভুলে গিয়ে
   নবীনকে করি আপন।



জলপাইগুড়ি, 
ভবানী নগর


কবিতা || নয়া বছরের পহেলা দিনের মুখোশাবদ্ধ পদযাত্রা || রানা জামান



নয়া বছরের আগমন আজ গতানুগতিক
পুরাতন ছেড়া জামা গায়ে রাখা গেলেও পুরনো বছর সময়ে পিনাবদ্ধ করা যায় না

সকলে কি চায় নতুন বছর আসুক?
নতুনের তকমা থাকায় পুরনোর অনেক কিছুর সমাধি ঘটে নতুনের গর্ভে
প্রত্যাশার খোল-নলচে বদল চায় না অনেকেই
প্রকৃতির চক্র ঠেকানোর কোনো ক্ষমতা কোনো রাষ্ট্র প্রধানের নেই
উহু! সংবিধান সংশোধন করেও এ ক্ষমতা পাওয়া যাবে না মুঠোয়!

ব্যর্থতার পটকা মাছে ডোলা ভরতে থাকে যার, তার নতুন বছর শুধু বৃদ্ধি করে দুঃসময়ের দৈর্ঘ-দীর্ঘ নিঃশ্বাসগুলো শুকিয়ে নেয় কাদায় আটকে থাকা জলও
ছা-পোষা কেরানি কিংবা সততার কণ্টকাকীর্ণ পথে চলা কর্মচারির অবসরে যাবার বছর হলে চোখে লাগে ঘোর অন্ধকার

ক্ষমতার ঝোলে ডুবে থাকা সকলের বিন্দাস উৎসব নয়া বছরের প্রথম দিবস
প্রতিদিন নববর্ষ থাকলে অনেক উল্লাস করা যেতো আমজনতার রক্ত চুষে!
যেকোনো ছুতোয় আমজনতার রক্তচুষা মামুলি ব্যাপার এখন!

নকল পান্তায় পাঁচতারা হোটেলে জম্পেশ বর্ষ বরণের পার্টি
কৃষকের নেংটি কতটুকু শুকাবে তা নির্ধারণ করে রাইস মিলারগণ রাষ্ট্রযন্ত্রের নাটবল্টু হয়ে

নয়া বছরের পহেলা দিনের মুখোশাবদ্ধ পদযাত্রায় ঢাকা থাকে শোষিতের আর্তনাদ
শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও শাসকের জোঁকচরিত্রের ঘটে নি রকমফের
পল্লীর আনন্দ বুর্জোয়া চরিত্র ছিনতাই করে নিয়ে গেছে পাঁচতারা হোটেলে ও সমুদ্র সৈকতে
পাশ্চাত্যের বিকিনি-ব্রা বাঙালির সংস্কৃতি গিলে নিয়ে গেছে লিভিং-টুগেদারে

নয়া বঙ্গাব্দের আগমন এখন যুৎসই পর্ব উদযাপন শহুরে ধনিক শ্রেণীর কাছে।



রানা জামান
আনিলা টাওয়ার
বাড়ি ১৮-১৯; সড়ক ৩; ব্লক আই;
বড়বাগ(ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের পেছনে) মিরপুর-২;
ঢাকা-১২১৬; বাংলাদেশ


কবিতা || কথার উত্তর মেলেনি দীর্ঘদিন || পূর্বালী দে



কথার উত্তর মেলেনি দীর্ঘদিন,
   তার উপর জমেছে ব্যাকটেরিয়া ফাঙ্গাস পরজীবিদের স্তর
   বাহ্যিক অনুসন্ধানে যতটুকু বোঝা যায়,

   নিথর দেহে জড়িয়ে যাবার পর-
  পৃথিবীর শব্দ শোনাটা বড় বেশী কাঙ্খিত হয়ে উঠেছে,
  তোলপাড় হয়ে যাবে, তবুও প্রকাশের প্রতিটা ভাঁজে জড়তার ছাপ ,
 হয়তো নিস্ক্রিয় কোন সাম্রাজ্যের দিকে আগুন ছুঁড়ে দিয়ে বলবে, ধ্বংসাত্বক রূপেও একটা আদিমতা আছে।
 দূরত্বের প্রতিটা আলোকবর্ষ , মায়াময় অধ্যায় যেন
   উত্তরায় থেমেছে, আবরণে রঙতুলির মতো।।


২৪, কেদারনাথ দেউটি লেন কদমতলা হাওড়া ৭১১১০১


কবিতা || বর্ষবরণ || গোবিন্দ মোদক




মায়াবী ফাগুন উত্তরে উড়ে গেল
বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে হলদে শাড়ির আঁচল; 
নিরুপায় চৈতি বাতাস বরণ করে নিলো 
নতুনের সব কৌতূহল .... 
বছরের এলো নতুন জন্মদিন।
অনেক মোমজন্ম পেরিয়ে বছর আবার 
নতুন করে দাঁড়ালো কাগজে-কলমে।
নির্মম শব-সংগীত শেষে নতুন করে বাজলো 
মুখ ও মুখোশের কলতান;
অসুখের সংসার পরে নিলো সুখের পোশাক 
আর কারা যেন তাদের ছবির ক্যানভাস খুলে 
গেয়ে উঠলো গ্রামছাড়া ঐ রাঙ্গামাটির পথের গান;
পৃথিবীর শুদ্ধতম ভালোবাসা কবিতার মতো 
ঝরে পড়লো মুগ্ধবোধ ব্যাকরণের পাতায় পাতায় —
এসো হে বৈশাখ !



গোবিন্দ মোদক। 
সম্পাদক: কথা কোলাজ সাহিত্য পত্রিকা। 
রাধানগর, ডাক- ঘূর্ণি, কৃষ্ণনগর, নদিয়া। 
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত, ডাকসূচক - 741103


কবিতা || নববর্ষ-১৪২৯ || শুভ্রব্রত রায়




হে নূতন বছর এসে করো সংক্রমণ রোধ,
মানবজাতির হৃদয়ে জাগাও বোধ।
পৃথিবীর উপর ধেয়ে আসছে এক কালো ছায়া,
এ যেন অশুভ শক্তির মায়া।

এসেছে পৃথিবীতে নেমে যে অন্ধকার,
মানবজাতি করবে একদিন তার তিরস্কার।
অশুভর প্রভাবে জগতের সৃষ্টি হয়েছে কালো,
এই কামনা করি নূতন বছরে আসবে নূতন সূর্যোদয়ের আলো।



শুভ্রব্রত রায়
গ্রাম + পোস্ট - মন্তেশ্বর
পূর্ব বর্ধমান


কবিতা || একটু সহানুভূতি || চঞ্চল সেখ



প্রেমহীন বৈচিত্রময় ছিন্ন বিছিন্ন মানুষের কাতার,
ঐক্যর মাঝে হিংসার দাবানল ৷

নিঃসঙ্গের মাঝে কূটনীতির বিস্ফরণ৷
ঘৃণার বাক্য, 
সন্দর পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা আজ বড় কম৷..
নানান উৎসবে মেতে উঠেছে এজগৎ,
প্রকৃত উৎসব সেটা, 
যেমন সুন্দর প্রকৃতিকে চোখে দেখার নিষ্পাপ অনুভূতি৷
অনুরুপ মনুষ্যমনেও দরকার সেই একাত্নবাদী মিলন আর্দশের শান্তির সহানুভূতি৷
তবেই হবে নব সুপ্রভাত ৷


চঞ্চল সেখ
নওপাড়া, উখুড়া সরাংপুর
পূর্বস্থলী, পূর্ব বর্ধমান


কবিতা || শুভ নববর্ষ || অমল চক্রবর্তী



পুরানো যায় নতুন আসে
এটাই বিশ্ব রীতি। 
হিংসা ভুলে ভালোবেসে 
হৃদে জাগাও প্রীতি। 

বছর শুরুর শুভেচ্ছা নিও 
আত্মীয় বন্ধু সবে। 
পুরানো ভুল সুধরে নিয়ে
 প্রভুর কথা কবে। 

নতুন বছর করবো বরণ
হিংসা বিদ্বেষ ভুলে। 
রোগ ব্যাধি সব আছে যতো
নাও না প্রভু তুলে। 

নতুন বছর নতুন দিনে 
নতুন আশা বুকে 
শান্তি সুখে ভাসবো মোরা
রইবো নাকো দুখে। 

নবীন সনে সবার মনে 
ফুটে উঠুক হাসি। 
দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যাক
বাজুক প্রেমের বাঁশি। 

নতুন করে গড়বো মোরা
পুরানো বিশ্ব টাকে
অতীত স্মৃতি ফেলবো ঝেড়ে 
বছর শুরুর ফাঁকে।


অমল চক্রবর্তী 
গ্রাম + ডাকঘর :- সিংহালী, মন্তেশ্বর 
পূর্ব বর্ধমান 
713145

কবিতা || এসো হে বৈশাখ || স্বপ্না মজুমদার



এসো হে বৈশাখ এসো এসো
এসো দাবদাহ নিয়ে
প্রকৃতি নিয়ম সব মেনে
চৈতালি চাঁদ দেখা শেষে,,
এসো হে,এসো হে,এসো হে!!
এনো শান্তির শুভ বার্তা
সকলের মন জুড়ে
পৃথিবী হোক শান্ত
উত্তপ্ততা তোমার শুধু থাক
পৃথিবীর সকল বিষাক্ততা
যাক বৈশাখী তপ্ততায় পুড়ে,,
এসো হে, এসো হে,এসো হে!!
এনো কালবৈশাখী ঝড়খানি
উড়ে যাক সকল মনের গ্লানি
বৃষ্টি নামুক এবারে
ধুয়ে যাক ভাইরাস, মহামারী,
এ পৃথিবী হাসুক গতি ছন্দে
এসো বৈশাখ নব বর্ষ বরণে
বাংলা বছর হলো শুরু
সুন্দরতা, মাধুর্য, ভালোবাসা
বর্ষিত হোক সকল হৃদয়ে,,
এসো হে, এসো হে, এসো হে!!
এসো বৈশাখ নতুন ছন্দে
পৃথিবীকে গড়ে তোলো
স্বচ্ছ হৃদয়,মানবিকতায়
যুদ্ধ চাই না আর কোথাও
রক্তাক্ত পিচ্ছিলতা আর নয়
চাই এক প্রান এক মন
সকল মানব হৃদয়,
চাষীর কান্না, গরীবের ক্ষুধা
বেকারের কষ্ট আর নয়
চাই না বৃদ্ধাশ্রম
এতো বেশি গড়ে উঠুক
চাইনা হানাহানি, পৃথিবীময়
এসো বৈশাখ, পূর্ণ করো
সুন্দর করো মানব হৃদয়।
এসো তুমি,চির সুন্দর হয়ে।


SWAPNA MAJUMDER
C/O. Mr. Rajendran
Row house,No--A-11, Plot No-144 A
SIDDHI Homes
Sector--13, PCNTDA, CHIKHALI,
 HAVELI Dist, PUNE, MAHARASHTRA
PIN-411019


কবিতা || এই বছরে || বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী



আরো নতুন একটা বছর এল নতুন দিন ,
বর্ষ শেষে নতুন বর্ষ আসে , মাফিক রুটিন ।
তবু মনে হর্ষ আসে অজানা দিনের পরদা ,
একে একে উঠবে যবনিকার আড়াল সদা ;
বুকের মাঝে লাগছে কাঁপন , মনে কতই আশা
এবার হবেই খারাপরা দূর হটবে সর্বনাশা ।
সবাই থাকে একটু পাবার আগ্রহে অধীর 
যেমন জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে অজানা গতির ।
আকাশ কুসুম ভালোই লাগে ভাবতে নববর্ষে ,
পাব কি না পাব , ভাবি পড়ব না তো মুষরে ।
বরণ করে নেব নতুন বছরটাকে ভাবি না অমঙ্গল ,
মনের মাঝে প্রশস্ততা , হাসব অনর্গল ।



কবিতা || পরিনতি || লাবণী ধর



লাল নীল রঙের স্রোতে ভাসতে ভাসতে পরিণত হওয়া,
অনেকটা সব রকমের মিষ্টি, টক আর তেঁতোর স্বাদ নিয়ে -
কোনো স্বাদের প্রকোপ বেশি, কোনোটা কম,
ভোরের সূর্যটা আর হাঁ করে দেখিনা,
সময় কোথায়?
আচ্ছা বলুন তো - যাঁতাকলে রোজ পিষতে পিষতে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ....
তবে মনের সেই লাল গোলাপ টা এখনও বেশ টলমলে ভাবে আছে,
মাঝে মাঝে প্রেম, ভালোবাসা দিয়ে ঝাপটা দেওয়া,
তবে ব্যস্ত জীবনে আর গোলাপের গন্ধ নেওয়া হয় না।
একবার মনের সেতু তৈরি হলেই ত হিল্লে হয়ে গেল,
মায়ার শিকড়ে মাঝে মাঝে একটু টান পরে,
তবে অনেকটা সংযত ভাবে ,
পৃথিবীর হাসি কান্নার পোশাক পড়ে বেশ আছি !
তবে কাজের খামতি নেই,
" কর্ম করিয়া যাও, ফলের আশা করিও না"
হাহা ,প্রলাপ মনে হচ্ছে !
প্রলেপ দিয়ে প্রলাপ আমি পারি না ,
তাই কিছু অনুভূতি কলমেই ভালো!




LABANI DHAR
Flat - 204, Akhila Apartment,
Indira Nagar Colony
On Venkatapuram Road.
Lothkunta, Trimulgherry
Secunderabad - 500015


কবিতা || পাহাড়ে জন্ম || মনিরুজ্জামান প্রমউখ




পাহাড়ের রূপে, গন্ধে নিয়েছি জন্ম 
জানেনি মনতো 
লতায় পাতায় বেড়ে উঠি সামন্ত 
জবাফুলের মতো।  

শৈশব লুকিয়ে থাকে বিস্মৃতির গুহায় 
জেনে উঠি যখন সমুদ্র আপন হয়ে রায়।  

খাগড়াছড়ির বাঁকে নরম তুলতুলে হাতগুলো নড়েছিলো 
ফেলে আসা ভুবনমোহন পার্বত্য তাড়া করে ফিরছিলো।   

বৈশাখী মনের নদীগুলো শ্রোতহারা হয়ে পরে 
লিঙ্কনীয় গান এখানে তবলাহারা নরসিংদী বিটে।   

রোমন্থনের ঘ্রাণটুকু কেবল হৃদয়ের শ্বাস টানে 
ফিরে যাবো কোনোদিন অটল পায়ে প্রারম্ভের গাঁয়ে।


মনিরুজ্জামান প্রমউখ। 
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, বাংলাদেশ। 
পরিচালক- সাহিত্যে'র বাস্তু-ডাক-ঘর। 


কবিতা || নববর্ষ || অদিতি ঘটক




দুঃখ সুখের গ্লানি মুছে বাজাই শঙ্খ ধ্বনি
শুভ্র উজ্জ্বল প্রভাতে শুনি তোমার পদধ্বনি
চৈতি হাওয়া বিদায় জানায় জীর্ণ পুরাতন
বৈশাখী রাগ মেখে তোমার আগমন

হাসি মুখে বরণ করি নতুন সাজে সেজে 
হাল খাতার কলরবে বাঙালি ওঠে মেতে
বছরভর থাকে যেন শান্তি সুধা স্পর্শ নববর্ষ সবার মনে আনুক নব হর্ষ।



অদিতি ঘটক
চুঁচুড়া, হুগলি



কবিতা || হে নবীন || দেবযানী মহাপাত্র



প্রখর দিন 
অযুত আশা 
লক্ষ্য বিহীন। 

তপ্ত রোদ 
পোড়ায় চোখ 
শ্বাস শুকায়। 

ঝড় আসুক 
উড়িয়ে যাক 
সব মলিন। 

জল আনো 
নবীন হে 
প্রাণ জুড়াক।



Debjani Mahapatra 
Rukmini Bhawan 
57/1 SN Banerjee road 
Barrackpore
Pin No-700120 



ছড়া || কাঠবিড়ালীর লেজ || তূয়া নূর



জানতে পেলাম অবশেষে 
গতরাতের শেষ খবরে 
কাঠবিড়ালী একদিন নাকি 
হয়েছিলো লেজ গোবরে!

সাত ধোয়াতেও হয়না যে দূর
গন্ধ থাকে লেগে
সেই ছবিটা গভীর হয়ে 
মনে আছে জেগে। 

লেজের কথা আর কখনো
যায়নি সেতো ভুলে
তখন থেকেই লেজটাকে সে
পিঠে রাখে তুলে। 


11513 centaur way 
Lehigh Acres, Fl 33971, USA
239-822-1417

ছড়া || নতুন বছরের প্রথম দিন || হারান চন্দ্র মিস্ত্রী



আসছে এবার নতুন বছর
আসছে নতুন দিন,
নতুন জামা জুতো পরে 
বাজাই বসে বিন।

ভোরে উঠে আগুন জ্বেলে
শুরু হবে দিন,
নিম-হলুদের সোহাগ মেখে
নাচব তা ধিন ধিন।

দুপুরবেলা খাওয়া হবে
নতুন স্বাদের পদ,
কোনোভাবে আমার কথা
আজ হবে না রদ।

বিকালবেলায় ঘুরবো মেলায়
খাব আলুর চপ,
সবাই মিলে গাঁয়ের মেলার
ফেরাব গৌরব।

রাতেরবেলা যাত্রা দেখা
আমার অভিপ্রায়,
মায়ের কোলে মাথা রেখে
রাত্রি কেটে যায়।



হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
গ্রাম ও পো- আমতলা,
থানা-ক্যানিং,
জেলা-দক্ষিণ 24 পরগনা,
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ,
পিন নং-743337


ছড়া || দীনুর ঘোড়া || তুষার মণ্ডল



চাতরা হাটে কিনলো দীনু টগবগে এক টাট্টুঘোড়া
শুধায় কিনু কিনলি একি ঘোড়ার দেখি এক পা খোঁড়া।
কিনলি যদি নগদ দামে দেখলি না তার ক'খান পা
হোক না খোঁড়া আমার ঘোড়া বল দেখিনি তোর কি তা?
ঘোড়ার আমার শিক্ষা আছে ফেলবে কদম যত্ন করে
এক পা তাহার খালের ধারে আর পা খানি ঢিবির 'পরে
চলতে পথে আমার ঘোড়া খুরে তাহার সুর ছড়ায়
দুর বোকা তুই খোকা নাকি চলার দেখি ভরসা নাই।

ভেলকি জানে আমার ঘোড়া কদম কদম ফেলবে পা
নিখুঁত নিশান রন ক্ষেত্রে শঙ্কা কি তা ঘুণাক্ষরে জানেই না।
চলল দীনু রাজ সমীপে চাগিয়ে কাপড় বল্গা এঁটে
বাগিয়ে ধরে চাবুকটিরে টগবগিয়ে ঘোড়ার পিঠে।
ছুটতে গিয়ে ছিটকে পড়ে উলটে ঘোড়া চিৎপটাং
হুমড়ি খেয়ে হড়কে পড়ে ভাঙল দীনুর জোড়াঠ্যাং।



গ্ৰাম--ফতেপুর// পোস্ট--কয়থা//জেলা--বীরভূম
পিন কোড নং---731220


ছড়া || পিঠা || রেজাউল করিম রোমেল




নতুন চালের নতুন পিঠা
খেতে লাগে মজা,
নানা রকম পিঠা খেলে
মনটা থাকে তাজা।

পাটি-সাপটা কুলি পিঠা
খাবে নাকি ভাই?
আরো আছে ভাপা পিঠা
সবাই বলে চাই।

পিঠা উৎসব দেখতে হলে
চলো গ্রামে চলো,
গ্রামে আছে অনেক পিঠা
যেতে চায়লে বলো।


রেজাউল করিম রোমেল
চাঁচড়া,রায়পাড়া,
ইসমাঈল কলোনি,
যশোর, বাংলাদেশ।

ছড়া || নালিশ || কৃপাণ মৈত্র


নালিশটা এই দিলাম ঠুকে 
 জজ সাহেবের দরবারে
পুবেতে যে সূর্য উঠে 
পশ্চিমে যায় কার দ্বারে?

 জোয়ার-জলে ফুলে সাগর
ভাটায় কেন রুগ্নকায়
শীতের সময় উত্তরবায়ু 
গ্রীষ্মে কেন বিরুধ বায়?

ডানা নেই তো মেঘ গুলো সব 
কেম্নে উড়ে আকাশে
 কি উপাদান আছে এমন
 মানুষ বাঁচে বাতাসে ?

রাতের বেলায় ঠান্ডা বটে
 দিনের বেলায় তাপ
 হেতায় দেখি এক ওজন তো
মেরুতে ভিনমাপ।

 প্রশ্ন আমার অনেক আছে
 সাজিয়ে ফেলা চাই 
শুনবো না তো বাহানা কোন 
উত্তর চাই চাই।


কৃপাণ মৈত্র
প্রযত্নে-বিমল সিং
গ্ৰাম- পোস্ট -সুতাহাটা
জেলা-পূর্ব মেদিনীপুর
পিন ৭২১৬৩৫

মুক্তগদ্য || রোদ || নীলম সামন্ত



দিনের মত করে বছরও ফুরিয়ে যায়৷ যেই রোদটা কাল এসে পা মুছে ছিল পাপোশে সে আজও আসবে৷ তাকে বলব আগামী কিছুদিনের মধ্যেই নববর্ষ৷ একটা নতুন জামা পরে এসো। সভ্যতার মহাগ্রন্থ লিখছ বলে কি আজীবন উলঙ্গই থাকতে হয়? 

রোদ হাসে। হাসতে হাসতে প্রকট হয়৷ কানের গোড়ায় ঘাম জমলে আকাশের দিকে তাকাই বারবার৷ এই ছন্নছাড়া কালো মেঘ, দু একটা পাখি, ঝলসানো ঘাস ইত্যাদি উপেক্ষা করে সেমিজের ভেতর থেকে বের করে আনি একমুঠো মেয়েবেলা। যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন"- এর পাশে বেড়ে উঠেছিল হরিতকী গাছ৷ দু একটা স্বপ্ন, যেখানে আজও জানু পেতে বসে আছে আমাদের পূর্বপুরুষের আগুন৷ 

আমি কোন জাতিস্মর নই। এ জন্মেই চিনে নিয়েছি ব্যক্তিগত রোদ, বৃক্ষ, নদী, পাখি, আর অক্সিজেন। বেঁচে থাকার উপায়গুলোতে প্রত্যেকেই ফুটিয়েছে নীলপদ্ম৷ প্রতিবার নতুন বছর এসে চলতি পথকে পুরনো করে দিলে আরামকেদারায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ে গোপন দহন৷ গম রঙের আলো এসে পালিশ করে দেয় যাবতীয় সঙ্গম। 

এই সব দেখে খাতায় লিখে রাখি যারা জ্বলে তাদের রঙ রোদ। যারা পোড়ে তাদের রঙ পৃথিবী। যারা হাসে তাদের রঙ নববর্ষ৷ যে গাছগুলো ফল দেয় তার কাছে মানত করি একটা তিনশ পঁয়ষট্টি আসুক মুক্তির৷ খোলা পিঠের ওপর খোদাই করা কবিতার শরীরে জন্ম নিক এক দুই তিন- অসংখ্য ছায়াশব্দ৷ 

তারপর কোন একদিন রোদের বাড়ি গিয়ে বলব লালনের একতারায় সুর উঠেছে৷ সে এক আদিবাসী গ্রাম৷ যেখানে প্রতিটি মেয়ের বুকের ভেতর লুকোনো আছে শতাব্দীর তীব্র প্রপাত। যেখানে সমস্ত আগুন উড়িয়ে দিয়ে চোরাস্রোতে মিশে যাচ্ছে প্রিয় জয়ন্তী৷ আরামকেদারায় তখনও শুয়ে শুয়ে রেডিও শুনবে দুপুরের রোদ৷ পায়ে জুতো মাথায় টুপি, হাতলের পাশে রাখা থাকবে বিদেশি ক্যাকটাস৷ আমি বরং ভলিউম বাড়িয়ে চালিয়ে দিই প্রিয়জনেদের উচ্চারিত গায়ত্রি মন্ত্র৷


নীলম সামন্ত 
থানে ওয়েস্ট, মহারাষ্ট্র, ৪০০৬১৫