Friday, July 15, 2022

কবিতা || স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায়









জগতী-ছেদক 

স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় 

হাউ হাউ করে ঝড় উঠছিলো যখন, আমি উঠোনের কাছে জল ছুঁয়ে বসে আছি আর নারকেল গাছ মাথা দোলাচ্ছে তখন।
বেণু বিনে গান গাইলাম আমি যখন, দেখি কোন গ্রাম থেকে এসে সাদা মেয়েটা ছিন্ন মেঘের বর্ষাফলকে হাসছিলো কেমন! 
তার খোলো ওই চাঁদের গ্রহণ ডাকছে; রহস্য দিয়ে আঙুলের ফাঁকে আজন্মকাল অভিমান হয়ে বাড়তে বাড়তে থেমে গেলো। 
দাউ দাউ করে এগিয়ে বললে কখন; দেখি খ্যাপাটে মেয়েটা খুব একা একা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চশমার কাচে কাঁদতে কাঁদতে এলো।
  
টুকরোর কণা শুঁকে শুঁকে ভাললাগছে; সাপ ছেড়ে ওই বাধের কাছে তিল পড়ে আছে মেয়েটার বুকে সাপ ছেড়েছুঁড়ে জবরখাস
খাই খাই করে যেই ঝাঁপ দিলাম গহ্বরে; কুণ্ডল খুলে গেলো আমি রথে নেই তাও রথের চাকার মাটির মুখ আমার মুখে বেঁধাস! 
বিরাট বিরাট আমি-কীচকের মুখটা; বলতে বলতে খোঁপাটা খুলতে খুলতে রাতটা ভাঙতে ভাঙতে জগৎ প্রাণেতে আসতো?
রাধা বিনে শ্যাম কতোবার তুমি ঝুলেছো; সে ভালোবাসলে এতো রাগ করে বিছানায় পড়ে পড়ে কেউ কি আমাকে গালাগাল দিতে পারতো?
চামেলি-বিতানে ছায়া পড়ে খুব ময়ূর; মৃগয়াবিলাসী তিনি কবি নন চিত্রচিন্তা করে করে তিনি একাংকরীতি ধরে রাখতেন। 
গোখরোর ফণা জিভ-বের করা মুখটা; কি কচি আর কি শুচি লাগছে মেয়ে গোখরোটা ছেলে গোখরোটা তোমাকেই ভালোবাসছেন।

বনবন করে ঘোরো গোবিন্দদাস হে; চিন্তার চেয়ে তদ্বির ভালো গাড়ির বনেটে অস্তাচলের  শ্যামকল্যাণ-রসকলি তুমি বেবি!
চোখের কোণায় মালকোষ পোষো মূরতি, ওর কাছে এতো লজ্জা ঢাকলে সস্তা উপায়ে দ্যাখা হওয়া ধান ওল্টাতো খুব হেব্বি? 
সম্বর-শিরা যেখানে যেমন ক্যাথিটার; তাও কেউ যেন খাবি খেতে চায় ডিসেম্বরের শীত উৎসব মেনুর দখিন-বায়, হায়, 
দেখেছি তো সব মনপসন্দই নেকি; হামাগুঁড়ি দিয়ে বুড়ো ভ্যাচকালে এদিকে ছুঁড়ির তপস্যাবলে নাচিছে যেন প্রতাপ রায়! 
রমাই এগোলো ভেতরে ঢুকলো বিকেলে; আর দরবারি কানা রাগ শোনানোয় বেছে বেছে তার তিনকাল মধু উপচে দিয়েছে পাত্রে।
আমি কি ঘোড়ার আঁকাবাঁকা হ্রদ হংসী; প্যাঁক প্যাঁক করে কাল ও ভদ্রে সামনে পিছনে টিপে টিপে জ্বর মাপবে আর পারদে লিখবে সাঁত্রে? 
অস্তিত্বের সংঘাত না হাফডোজ; তার হৃদি ও মন্ত্রে বিভিন্নতার পাঁজাকোলে-করা রোগীর চুমুতে কে দেয় আমায় পীড়া? 
কেউ দেয় না শুধু সন্ধানে ডুবডুব; ডুবসাঁতারের লেলিহান মন আগে তো ভাসার সাঁতারটা শিখে চটপটে হবে ত্রিধারা! 
চোখের সাদা দীপ্তির নিচে সামকালো; উল্টেপাল্টে ছেদ, যতি টেনে খুব পূর্ণিমা ভ্রু-পল্লবিনী নীলকান্তিতে হাসছে। 
খয়রাত তাই শব্দের মনবিকানো; কুয়াশার রাতে যায় কিছু দ্যাখা তাই শীতমেয়ে গরল-হাসিতে অভিগত-গোল আঁকছে।  



৮৫, সুকান্ত নগর, ভদ্রেশ্বর,
ডাকঘর: অ্যাঙ্গাস, জেলা: হুগলি,
ডাকসূচক: ৭১২২২১


   

No comments:

Post a Comment