লড়াই লড়াই লড়াই চাই
প্রদীপ দে
-- দ্যাখো, একবার চোখ তুলে দেখো পাশের বাড়ির তরুণ দাদাকে। কি পরিশ্রমী আর কি চাকরি! আহাঃ মাহিনা কত পায় জানো?
-- না জানিনা আমার জেনে কি লাভ? তা তোমার ওই দাদার উপর এত পিরিত জাগালো কেন হে?
-- তা জাগবে না? ওতো ভালো পূরুষ? কি হ্যান্ডসাম আর মাহিনাটা দেখো? তোমার মত অকর্মক নয়তো?
-- ওহঃ তাই বুঝি? তাহলে ওর গিন্নিকেও দ্যাখো।যেমন রূপ তার তেমনই গুন। আর বিদেশী ফার্মে চাকরি? মন জুড়িয়ে যায়! শাড়ি ভর্তি টাকা। আর ওর পাশে নিজেকে একবার ভাল করে দেখো ……
-- ওহঃ তোমারো অনন্যা কে চোখে লেগে গেছে?
একটা ঢলানি মাগী! চাকরি করে, না ছাই করে?
বেশ্যাবৃত্তি করে - বুঝেছো। ওহঃ তুমিও ওর ফিগার দেখে নিয়েছো! তাহলে তো হয়েই গেলো। যাও টাকা নিয়ে গিয়ে ঢালো!
-- আর তো তরুণ দাদার কি খবরাখবর। কেবলই দেখি তোমায় ঝাড়ি মারে? লটকে যাও। আর কি?
-- অসভ্য জানোয়ার! তুমি ওর পায়ের নখের যুগ্যিও নও, বুঝলে?
-- অনন্যা ও অসামান্যা বুঝলে?
-- তোমার স্বভাবই শুধু নিন্দা করা। বুঝলে?
তরুণ একেবারে তরুণ ই! আজ ও হিরো!
-- তা হিরো যদি পেয়েই গেছো তাহলে এই বুড়ো জিরোর পাশে এসেছো কেন?
-- হ্যাঁ হ্যাঁ সব জানি আমাকে ছিবড়ে বানিয়ে এবার কুঁড়ি খুঁজতে গেছো -আসলে ওই অনন্যাকে তরুণদাও ছেড়ে দিয়েছে!
-- তা তোমার তরুণ ই বা কম কিসে?
-- ওর মন অনেক উদার - বউকে সন্দেহ বাতিক করে না!
-- আমিই বা কম কিসে? আমি ও দেদার! তোমাকে খেলতে ছেড়ে দিয়েছি।
-- কিন্তু আমি তোমায় ওতো সহজে ওই গাভীর পাল্লায় পড়তে দেবো না বুঝলে?
-- বাঃ বাঃ বেশ কথা!
ঝগড়া অল্প থেকে ভারী হচ্ছে। পরিবেশ গরম হচ্ছে। উত্তেজনার পারদ সীমারেখা অতিক্রম করে ফেলেছে। আমরা দুজনেই লড়াকু। মিউচুয়াল স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করার নিমিত্তেই এই বিয়েশাদি / বরবাদি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর কেউই কোন নিয়ম মানবো না, এক ইঞ্ছি জমিও কেউ ছাড়তে রাজী নই। তাই শান্তির কাঙাল না হয়ে - লড়াই লড়াই লড়াই চাই লটাই করেই বাঁচতে চাই - এই পদ্ধতিতেই এগিয়ে চলেছি।
বাইরে পাড়ার বন্ধুরা জানালার সামনে দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে। আমাকে দেখে চেঁচিয়ে উঠলো,
-- কি দাদা নারীকে নির্যাতন চালাচ্ছেন ? জেনে রাখুন এখন নারীদের যুগ আর ক্যালেন্ডারের আটই মার্চ। হচ্ছে বিশ্ব নারী দিবস!
আমার বোঝাতেই সাহসে এল না যে আমি আমার বউ ছাড়া অন্য সকল নারীদের আমি কত ভালোবাসি!
বিরাটী আবাসন
এল আই জি -৯
এম বি রোড
নিমতা
কোলকাতা -৭০০০৪৯
No comments:
Post a Comment